শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০১৭

তাকলীদের দুটো অর্থ আছে একটি আভিধানিক, অপরটি পারিভাষিক বা শরীয়তে ব্যবহৃত। তাকলীদের আভিধানিক অর্থ হলো গলায় বেষ্টনী বা হার লাগানো। শরীয়তের পরিভাষায় তাকলীদ হলো কারো উক্তি বা কর্মকে নিজের জন্য শরীয়তের জরুরী বিধান হিসেবে গ্রহণ করা কেননা তার উক্তি বা কর্ম আমাদের জন্য দলীলরূপে পরিগণিত। কারণ উহা শরীয়তে গবেষণা প্রসূত। যেমন আমরা ইমাম আজম সাহেব (রহমতুল্লাহে আলাইহে) এর উক্তি ও কর্মকে শরীয়তের মাসআলার দলীলরূপে গণ্য করি এবং সংশ্লিষ্ট শরীয়তের দলীলাদি দেখার প্রয়োজন বোধ করি না। হুসসামীর টীকায় রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর অনুসরণ অধ্যায়ের ৮৬ পৃষ্ঠায় ‘শরহে মুখতাসারুল মানার’ হতে উদ্ধৃত করা হয়েছে- التَّقْلِيْدُ اِتبَاعُ الرَّجْلِ غَيْرَهُ فِيْمَا سَمِعَه يَقُوْلُ اَوْفِىْ فِعْلِه عَلى زَعْمِ اَنَّهُ مُحَقِّقٌ بِلَا نَظَرٍ فِى الدَّلِيْلِ অর্থাৎ-তাকলীদ হলো কোন দলীল প্রমাণের প্রতি দৃষ্টিপাত না করে কোন গবেষকের উক্তি বা কৃত কর্ম শুনে তাঁর অনুসরণ করা। ‘নূরুল আনওয়ার’ গ্রন্থে তাকলীদের বর্ণনায় একই কথা বর্ণিত হয়েছে। ইমাম গাযযালী (রাহমতুল্লাহে আলাইহে) ও কিতাবুল মুস্তাফা এর ২য় খণ্ডের ৩৮৭ পৃষ্ঠায় বলেছেন- اَتَّقْلِيْدُ هُوَ قَبُوْلُ قَوْلٍ بِلَا حُجَّةٍ অর্থাৎ তাকলীদ হলো কারো উক্তিকে বিনা দলীলে গ্রহণ করা। মুসাল্লামুসছবুত গ্রন্থে বলা হয়েছে اَلتَّقْلِيْدُ اَلْعَمْلُ بِقَوْلِ الْغَيْرِ مِنْ غَيْرِ حُجَّةٍ (অর্থাৎ-তাকলীদ হলো কোন দলীল প্রমাণ ব্যতিরেকে অন্যের কথানুযায়ী আমল করা।) উপরোক্ত সংজ্ঞা থেকে বোঝা গেল যে হুযুর আলাইহিস সালামের অনুসরণকে তাকলীদ বলা যাবে না। কেননা তার প্রত্যেকটি উক্তি ও কর্ম শরীয়তের দলীল। আর তাকলীদের ক্ষেত্রে শরীয়তের দলীলের প্রতি দৃষ্টিপাত করা হয় না। সুতরাং আমাদেরকে হুযুর আলাইহিস সালামের উম্মত হিসেবে অভিহিত করা হবে তার মুকাল্লিদ বা অনুসরণকারী হিসেবে গণ্য করা যাবে না। অনুরূপভাবে সাহাবায়ে কিরাম ও দ্বীনের ইমামগণও হুযুর আলাইহিস সালামের উম্মত মুকাল্লিদ নন। এরূপ সাধারণ মুসলমানগণ যে কোন আলিমেদ্বীনের অনুসরণ করে থাকেন, এটাকেও তাকলীদ বলা যাবে না। কেননা কেউ আলিমদের কথা বা কর্মকে নিজের জন্য দলীল রূপে গ্রহণ করে না। আলিমরা কিতাব দেখে কথা বলেন এ কথা উপলদ্ধি করে তাঁদেরকে মান্য করা হয়। যদি তাদের ফতওয়া ভূল কিংবা কিতাবের বিপরীত প্রমাণিত হয় তখন কেউ তা গ্রহণ করবে না। পক্ষান্তরে ইমাম আবু হানীফা (রাহমতুল্লাহে আলাইহে) যদি কুরআন বা হাদীছ বা উম্মতের সর্বসম্মত অভিমত দেখে কোন মাসআলা ব্যক্ত করেন তাও যেমনি গ্রহণযোগ্য আবার নিজস্ব কিয়াস বা যুক্তিগ্রাহ্য কোন মত প্রকাশ করলে তাও গ্রহণীয় হবে। এ পার্থক্যটা স্মরণ রাখা একান্ত দরকার। তাকলীদ দুই রকমের আছে তাকলীদে শারঈ ও তাকলীদে গায়র শারঈ। শরীয়তের বিধান সম্পর্কিত ব্যাপারে কারো অনুসরণ করাকে তাকলীদে শারঈ বলা হয়। যেমন রোযা, নামায, যাকাত ইত্যাদি মাসাইলে ধর্মীয় ইমামদের অনুসরণ করা হয়। আর দুনিয়াবী বিষয়াদিতে কারো অনুসরণ করাকে তাকলীদে গায়র শারঈ বলা হয়। যেমন চিকিৎসকগণ চিকিৎসা শাস্ত্রে বু’আলী সীনাকে, কবিগণ দাগ, আমীর বা মির্যা গালিবকে এবং আরবী ভাষার দ্বিবিধ ব্যাকরণ নাহব ও ছরফের পণ্ডিতগণ সীবওয়াই ও খলীলকে অনুসরণ করে থাকেন। এ রকম প্রত্যেক পেশার লোকেরা তাদের নিজ নিজ পেশার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের অনুসরণ করে থাকে। এ গুলো হলো দুনিয়াবী তাকলীদ। আবার সুফীয়ানে কিরাম তাদের ওয়াজীফা ও আমলের ব্যাপারে নিজ নিজ মাশায়িখের উক্তি ও কর্মের অনূসরণ করে থাকেন। এটা অবশ্য দ্বীনী তাকলীদ কিন্তু শারঈ তাকলীদ নয়। বরং একে তাকলীদ ফিত তারীকত বলা হয়। কেননা এখানে শরীয়তের মাসাইলের হালাল হারামের ব্যাপারে অনুসরণ করা হয় না। হ্যাঁ যে কর্ম পদ্ধতির অনুসরণ করা হয় উহাও ধর্মীয় কাজ বৈকি। তাকলীদে গায়র শারঈ কোন ক্ষেত্রে যদি শরীয়তের পরিপন্থী হয় তাহলে সে তাকলীদ হারাম। যদি ইসলাম বিরোধী না হয় তাহলে জায়েয। বৃদ্ধা মহিলারা আনন্দ বিষাদের সময় বাপ-দাদাদের উদ্ভাবিত কতগুলো শারীয়ত বিরোধী প্রথার অনুসরণ করে, ইহা হারাম। চিকিৎসকগণ চিকিৎসা শাস্ত্রের ব্যাপারে বু’আলী সীনা প্রমুখের অনুসরণ করে থাকেন, ইহা ইসলাম বিরোধী না হলে জায়েয। প্রথম প্রকারের হারাম তাকলীদকে কুরআন শরীফের বিভিন্ন আয়াতে নিষেধ করা হয়েছে এবং এ ধরনের তাকলীদকারীদের নিন্দা করা হয়েছে। এ সম্পর্কে নিম্নে কয়েকটি আয়াতের উল্লেখ করা হলো- وَلَا تُطِعْ مَنْ اَغْفَلْنَا قَلْبَهُ عَنْ ذِكْرِنَا وَاتبَعَ هَوَاهُ وَكَانَ اَمْرُه فُرُطًا (তার কথা শুনবেন না, যার দিলকে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ করেছি যে নিজ প্রবৃত্তির বশীভূত ও যার কাজ সীমা লঙ্ঘন করেছে) وَ اِنْ جَاهَدَ اكَ عَلى اَنْ تُشْرِكَ بِى مَالَيْسَ لَكَ بِه عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا এবং যদি তারা (পিতা-মাতা) তোমাকে এমন কোন বস্তুকে আমার অংশীদাররূপে স্বীকার করানোর চেষ্টা করে যার সম্পর্কে তোমার সম্যক ধারণা নেই তবে তাদের কথা শুনিও না।) وَ اِذَا قِيْلَ لَهُمْ تَعَالَوْا اِلى مَا اَنْزل اللهُ وَاِلى الرَّسُوْلِ قَالُوْا حَسْبُنَا مَا وَجَدْ نَا عَلَيْهِ اَبَاءَنَا وَلَوْ كَانَ اَبَاءُهُمْ لَايَعْلَمُوْنَ شَيْأً وَّيَهْتَدُوْنَ (এবং যখন তাদেরকে (কাফিরদেরকে) বলা হয় আল্লাহ তা’আলা যা অবতীর্ণ করেছেন, সে দিকে এবং রসূলের দিকে আগমন কর, তখন তারা বলতো ওই কর্মপন্থাই আমাদের জন্য যথেষ্ট যা আমাদের বাপ-দাদাদের মধ্যে অনুসৃত হয়ে আসছে। যদিও তাদের বাপ-দাদাগণ না কিছুই জানতো না সৎ পথে ছিল। وَ اِذَا قِيْلَ لَهُمُ اتَّبِعُوْا مَااَنْزَلَ اللهُ قَالُوا بَلْ نَتَّبِعُ مَا اَلْفَيْنَا عَلَيْهِ ابَاءنَا (ط) (যখন তাদেরকে বলা হতো আল্লাহর অবতীর্ণ প্রত্যাদেশ অনুযায়ী চলো, তখন তারা বলতো আমরা আমাদের বাপ-দাদাগণকে যে পথে পেয়েছি সে পথেই চলবো। উল্লেখিত আয়াত ও এ ধরনের অন্যান্য আরও আয়াতে শরীয়তের মুকাবিলায় মূর্খ বাপ-দাদাগণের হারাম ও গর্হিত কার্যাবলীর অনুসরণ করার নিন্দা করা হয়েছে। তারা বলতো আমাদের বাপ-দাদাগণ যেরূপ করতেন আমরাও সেরূপ করবো সে কাজ জায়েয হোক বা না জায়েয। উল্লেখ্য যে উল্লেখিত আয়াতের সঙ্গে শারঈ তাকলীদ এবং ধর্মীয় ইমামগণের অনুসরণের কোন সম্পর্ক নেই। অতএব ঐ সমস্ত আয়াতের ভিত্তিতে ইমামগণের তাকলীদকে শিরক কিংবা হারামরূপে গণ্য করা ধর্মহীনতার নামান্তর। এ কথাটুকু স্মরণ রাখা দরকার। -সুত্রঃ জা’আল হক ১ম খন্ড-

শারঈ তাকলীদ প্রসঙ্গে বিস্তারিত বিবরণ প্রয়োজন। শরীয়তের মাসাইল হচ্ছে তিন রকমের-(১) আকায়িদ (২) ঐ সমস্ত বিধি বিধান যেগুলো কোন গবেষণা ছাড়াই কুরআন হাদীছ থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত (৩) ঐ সমস্ত আহকাম যেগুলো কুরআন হাদীছ থেকে গবেষণা করে বের করা হয়েছে।
আকায়িদের ব্যাপারে কারো তাকলীদ বা অনুসরণ নাজায়েয। তফসীরে রূহুল বয়ানে সূরা হূদের শেষাংশের আয়াতঃ-نَصِيْبَهُمْ غَيْرَ مَنْقُوْضٍ
এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ- (এ আয়াতে তাকলীদের নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে। তাকলীদ হচ্ছে অপরের উক্তিকে বিনা প্রমাণে গ্রহণ করা। এটা  ধর্মের মৌলিক ও আন্তরিক বিশ্বাসের সহিত সম্পর্কিত বিষয়াদি ছাড়া অন্যাণ্য ক্ষেত্রে (আনুসাঙ্গিক ও ধর্মীয় কাজ কর্ম সম্পর্কীয় বিষয়াদিতে) বৈধ কিন্তু ধর্মীয় বুনিয়াদী বিষয়াদি ও আকায়িদের ক্ষেত্রে এটা বৈধ নয়। বরং এ ক্ষেত্রে দলীল প্রামণ ও চিন্তা ভাবনার প্রয়োজন থেকে যায়।)
যদি কেউ আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করে আমরা তাওহীদ রিসালত ইত্যাদি কিভাবে স্বীকার করে নিয়েছি? এর প্রত্যুত্তরে ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর উক্তি বা তার রচিত ফিকহে আকবরের নাম উল্লেখ করলে চলবে না। বরং বলতে হবে যে তাওহীদ ও রিসালাতের দালীলাদির ভিত্তিতে এগুলো স্বীকার করে থাকি। কেননা এগুলো হচ্ছে আকায়িদ সম্পর্কিত বিষয় আকায়িদের ক্ষেত্রে তাকলীদ হয় না।
ফতওয়ায়ে শামীর মুকাদ্দামায়اَلتَّقْلِيْدُ المَفْضُوْلِ مَعَ الْاَفْضَلِ
এর বর্ণনায় উল্লেখ আছেঃ
(শারয়ী আনুষাঙ্গিক মাসাইল ব্যতীত যে সব বিষয়ে আমরা বিশ্বাস রাখি এবং কারো অনুসরন ছাড়াই যে সমস্ত বিষয়ে বিশ্বাস রাখাটা প্রত্যেক মুকাল্লাফ (বালিগ ও বিবেক সম্পন্ন ব্যক্তি) এর জন্য ওয়াজিব, সেগুলো হলো, আকায়িদের সহিত সম্পৃক্ত বিষয় যার ধারক ও বাহক হচ্ছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত অর্থাৎ আশা’ইয়রা ও মাতুরীদিয়াহ সম্প্রদায়।) তাফসীরে কবীরে ১ম পারার আয়াত- فَاجِرْهُ حَتَّى يَسْمَعَ كَلَامَ اللهِ  এর তাফসীলে লিপিবদ্ধ আছেঃ-


هذِهِ الْايَةُ تَدُلُّ عَلى اَن التَّقْلِيْدَ غَيْرُ كَافٍ فِى الدِّيْنِ وَاَنه لابُدَّ مِنَ النَّظْرِ وَالْاِسْتِدْ لَالِ

অর্থাৎ এ আয়াত থেকে বোঝা যায় যে ধর্মীয় ব্যাপারে তাকলীদ বা অনুসরণ যথেষ্ট নয়, যুক্তি প্রমাণ অন্বেষণেরও প্রয়োজনীতা অনুভূত হয়।
শরীয়তের সুস্পষ্ট আহকামে কারো তাকলীদ জায়েয নয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামায, নামাযের নির্ধারিত রাকআত সমূহ, ত্রিশ রোযা রাখা অবস্থায় খানাপিনা হারাম হওয়া ইত্যাদি মাসাইল কুরআন হাদীছ থেকে সুস্পষ্ট ভাষায় প্রমাণিত । এ জন্য এ সমস্ত ক্ষেত্রে এ কথা বলা চলবে না যে নামায দিনে পাঁচ বার বা রোযা এক মাস এ জন্য নির্ধারিত, যেহেতু ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেছেন বা তাঁর রচিত ‘ফিকহে আকবরে’ লিখা হয়েছে। বরং এ ক্ষেত্রে কুরআন থেকে সংশ্লিষ্ট দলীল প্রমাণাদি উপস্থাপন করতে হবে।
যে সব মাসাইল কুরআন হাদীছ বা ইজমায়ে উম্মত থেকে গবেষণা ও ইজতিহাদ প্রয়োগ করে বের করা হয়েছে, ঐ সমস্ত মাসাইলে মুজতাহিদ নয় এমন লোকের জন্য তাকলীদ ওয়াজিব।
আমি মাসাইলকে যে ভাবে ভাগ করে দেখিয়েছি ও উল্লেখ করেছি যে কোন ধরনের মাসাইলে অনুসরণ করতে হবে  আর কোন প্রকারের মাসাইলে তাকলীদ বা অনুসরণ করা যাবে না, এ বিষয়ের প্রতি যথার্থরূপে খেয়াল রাখতে হবে। কোন কোন ক্ষেত্রে লা-মাযহাবীগণ আপত্তি উত্থাপন করেন যে দলীল প্রমাণাদির ভিত্তিতে মাসাইল বের করার মুকাল্লিদের কোন অধিকার নেই। তথাপি আপনারা কেন নামায-রোযার সমর্থনে কুরআনের আয়াত বা হাদীছ সমূহ পেশ করেন?
এর উত্তরও উপরে বর্ণিত হয়েছে যে নামায-রোযা ফরয হওয়ার ব্যাপারটা তাকলীদী মাসাইলের অন্তর্ভুক্ত নয়। উপরের বর্ণনা থেকে এ কথাও জানা গেল যে আহকাম ছাড়া কোন ঘটনার খবর ইত্যাদিতে তাকলীদ হয় না। যেমন ইয়াযীদ প্রমুখের কাফির হওয়ার সম্পর্কিত মাসাআলা। কিয়াসের ভিত্তিতে বের করা মাসাইলেও ফকীহগণ কুরআন হাদীছ থেকে দলীলাদী পেশ করে থাকেন। এরূপ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বীকৃত সামাইলের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন। ঐ সব মাসাইল আগে থেকে ধর্মীয় ইমামের কথা অনুযায়ী স্বীকৃত হয়ে থাকে। সুতরাং দলীলের প্রতি দৃষ্টি পাত না করার অর্থ মুকাল্লিদের দলীল-প্রমাণাদির ভিত্তিতে সমস্যার সমাধাণ খুঁজে বের করা চলবে না। -সুত্রঃ জা’আল হক ১ম খন্ড-

see this video

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thaks for watching www.sunnihaque.blogspot.com