অতি শক্ত এবং ঐতিহাসিক দলিলে ভরপুর লিখাটি। বালাকোটি মুনাফিকদের মিথ্যাচারে হয়তো অনেকে বিভ্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। এই লিখাটির মাধ্যমে তাদের বিভ্রান্তি দূর হবে ইন শা আল্লাহ!]
ইতিহাস কথা বলে। ইতিহাস সবকিছুর স্বাক্ষী। মানুষের অতীতের দর্পণইতিহাস। কোন কিছু হেরফের করলে ইতিহাসের দর্পনে তা ভেসে উঠে। বৃটিশ সরকার ভারতবর্ষথেকে মুসলমানদের সমূলে নিধনের এক সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র আটল। মুসলমানদের দমনের জন্যেশুরু করল আত্যাচার-নির্যাতন সর্বোপরি হিংসা আক্রমণ। ঈমানী বলে বলীয়ানমুসলমানেরা দমবার নয়। অমোঘ শক্তিই যেন তাদের প্রতিনিয়তই অটল থাকার সাহসযোগাচ্ছে। বৃটিশ সরকার চিন্তা করল যে, কিসে তাদের শক্তি ও সাহস যোগাচ্ছে? অদম্য মুসলমানরা কেন দমবার নয়? বিভিন্ন প্রশ্ন তাদের অন্তরে বিঁধতে লাগল। এ ব্যাপারে তারা একটি বৈঠকও করল। বৈঠকে আলোচনার প্রেক্ষীতে তারা বুঝতে পারল যে, মসজিদ, মাদরাসা ও মক্তব ইত্যাদি মুসলমানদের মনোবল বৃদ্ধি ও অনুপ্রেরণার পিছনে সাহায্য করছে। তাই তারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে সিদ্ধান্ত নিল যে, এসব প্রতিষ্টানগুলোকে সরকার থেকে কোন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবেনা। এগুলো উৎখাত করার নিমিত্তে বিভিন্ন প্রকার ফন্দি আটল। ইত্যবসরে গোপ্নে সুন্নী মুসলমানদেরকে দমানোর জন্যে বৃটিশ সরকার সৈয়দ আহমদ বেরেলভী ও ইসমাইল দেহলভীকে ভাড়া করে নেয়। এই সুযোগে সৈয়দ আহমদ বেরেলভী মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব নজদীর ওহাবী আক্বিদা আমদানী করে তার প্রধান খলিফা ইসমাইল দেহলভীকে সঙ্গী করে ভারতবর্ষে প্রচার প্রসার করতে থাকে এবং ওহাবী ব্যতিত অপরাপর মুসলমানদের কাফির ফতোয়া দিতে শুরু করে। ভারতবর্ষে ওহাবই আক্বদাকে সুদৃঢ় করার জন্যে সৈয়দ আহ্মদ বেরেলভী কুফরী আক্বিদা সম্বলিত ‘সোরাতুল মুস্তাকীম’ নামক একটি পুস্তিকা প্রণয়ন করেন। এমনকি ইসমাইল দেহলভীও নবী-অলীদের শানে বেয়াদবীমুলক কুফরি কালাম সম্বলিত ‘তাক্বরিয়াতুল ঈমান’ নামক অপর একটি পুস্তিকা লিখেন। তারা উভয়ে বৃটিশ সরকারের পক্ষে ফতোয়া দিয়ে বালাকোটের পাঠান সুন্নী মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। সেই যুদ্ধে তারা উভয়ে সুন্নীদের হাতে নিহত হয়। তাদের মৃত্যুর পর মৌল্ভী কাষেম নানুতুবী বৃটিশদের সাথে যোগসাজশ ও দালালী করে ওহাবী আক্বিদাকে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে ‘দেওবন্দ মাদরাসা’ প্রতিষ্ঠা করে ওহাবীদের এজেন্ট হিসেবে ব্যবহার করেন। তাদের এই কুফরী সুলভ আক্বিদা যখন ভারতবর্ষে রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করল, তখন মুসলমানগণ দিশেহারায় পড়ে গেল। ঠিক তেমনি মুহুর্তে ভারতে বেরেলী নগরের আওতাধীন হাবুলী মহল্লার আন্তর্গত শাহ মাওলানা নব্বী আলী খানের (রহঃ) গৃহে ১২৭২ হিজরির ১০ই শাওয়াল, ১৮৫৬ খ্রীষ্টাব্দের ১৪ই জুন শনিবার জোহ্রের স্ম্য এই ধরাধামে জম্ম নেয় চতুর্দশ শতাব্দীর সর্বজন স্বীকৃত মুজাদ্দিদ ইমাম আহলে সুন্নাত বিশিষ্ট বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক, বাতিলদের যমদুত, আসংখ্য কিতাবের ক্ষুরধার লেখক শাহ মাওলানা আহমদ রেজা খাঁ ফাজেলে বেরেলভী (রহঃ)। তাঁর সাথে ওহাবী দেওবন্দীদের ঝগড়া কোন সম্পত্তি নিয়ে নয়। শুধু বাক বিতণ্ডা ছিল আক্বিদা ও ইশকে রাসুলের। তাঁর ক্ষুরধার লেখনীর কোন উত্তর দিতে না পেরে মিথ্যা চল-চাতুরীর আশ্রয় নিয়ে ওনাকে বৃটিশের দালাল বলে প্রচার করতে থাকে। ইতিহাস পর্যালোচনা না করে পুর্ববর্তী ওহাবী দেওবন্দী মৌলভীদের অব্দ অনুসরণ করে “এছলাহুল মুসলেমীন” পুস্তিকার ১৩২পৃষ্ঠায় অজ্ঞ লেখক মৌলভী আহমদগনি আ’লা হযরত (রহঃ) কে বৃটিশ পেট পূজারী আলেম বলে মিথ্যা অপবাদ দেন। বৃটিশের সালাল কারা ছিল? ইমাম আহমদ রেজা খাঁ (রহঃ) না ওহাবী-দেওবন্দরা? ইতিহাস কি বলে দেখুন। আমি বিস্তারীত তথ্য দিয়ে এই পরিসরে তা পাঠকমহলের সুবিবেচনার জন্যে সমর্পন করছি।
বৃটিশ দালাল ও পেট পূজারী আলেম দেওবন্দীরাঃ-
ইমাম আহমদ রেজা খান (রহঃ) বৃটিশর দালাল ও পেট পূজারী আলেম কখনও ছিলেন না। তিনি তাঁর সমগ্র হায়াতে কলম যুদ্বে আবর্তীণ হয়ে অসংখ্য কিতাবাদি রচনা করে দ্বীনে ইসলামের খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁর সমগ্র হায়াতকে যদি তাঁর রচিত কিতাবগুলো দ্বারা ভাগ দেয়া হয়, দিন প্রতি ২/৩ খানা কিতাব পড়বে। পাঠক মহল ভেবে দেখুন, তিনি বৃটিশের দালালী ও পেট পূজা করার সময় পেলেন কখন? বরং তাঁর জীবন চরিত আলোচনা করলে দেখা যায়, তিনি সবসময় বৃটিশ বিরোধী ফতোয়া দিতেন। মূলতঃ বৃটিশের দালাল ও পেট পূজারী আলেম ছিলেন সৈয়দ আহমদ বেরেলভী হতে শুরু করে দেওবন্দী-ওহাবী মৌলভীরা। ইতিহাসে এ ব্যাপারে যথেষ্ট স্বাক্ষ্য ও সবুত রয়েছে। ইতিহাস যা বলে –
(১) ইংরেজদের পক্ষে মৌলভী ইসমাইল দেহলভীও সায়্যিদ আহমদ বেরেলভীর ফতোয়াঃ
(ক)
অনুবাদঃ ওয়াজের মাঝে, কোন ব্যক্তি তার (ইসমাইল) কাছে জানতে চায়, আপনি ইংরেজদের বিরুদ্বে জিহাদ করার কেন ওয়াজ করেন না? তারাও-ত-কাফির। তাঁর উত্তরে মৌলভী মুহাম্মদ ইসমাইল সাহেব বলেন যে, ইংরেজদের আমলে মুসলমানদের কষ্ট হচ্ছেনা। আর আমরা যখন ইংরেজদের প্রজা হই। এ কারণে আমাদের ধর্মমতে ইংরেজদের বিরুদ্বে কোন যুদ্বে আমাদের শরীক না হওয়া ফরজ। উপরন্তু এই সময় অস্ত্র সজ্জিত হাজারো মুসলমান এবং যুদ্বের অগণিত সাজ সরঞ্জাম শিখদের বিরুদ্বে যুদ্ব করার জন্য হিন্দুস্থানে জমা হয়ে যায়।(মক্বালাত-এ-স্যার সায়্যিদ ৯মখন্ড ১৪২পৃঃ)
(খ)
অনুবাদঃ ইহাও একটি বিশুদ্ব বর্ণনা যে, কলকাতায় অবস্থানকালে আকদা মাওলানা ইসমাইল শহিদ ওয়াজ করছেন, তখন এক ব্যক্তি মাওলানার কাছে প্রশ্ন করেন যে, ইংরেজ সরকারের বিরুদ্বে যুদ্ব করা জায়েজ কিনা? তার উত্তরে মাওলানা বলেন যে, এমন নিষ্টাবান ও নিরপেক্ষ সরকারের বিরুদ্বে যুদ্ব করা কোনভাবে জায়েজ নয়। (ছাওয়ানেহে আহমদী, মতবুয়া-এ-ফারুকী, দিল্লী৭৩পৃঃ)
(গ)
অনুবাদঃ যখন তিনি শিখদের বিরুদ্বে যুদ্ব করতে তসরিফ নিচ্ছেন, তখন কোন ব্যক্তি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, শিখদের বিরুদ্বে যুদ্ব করার জন্যে এতদূর কেন যাচ্ছেন? ইংরেজ যে এদেশের শাসক, তারা কি ইসলাম ধর্মের মুনকের বা বিরোধী নন? ঘরে ঘরে তাদের বিরুদ্বে যুদ্ব করে হিন্দুস্থান কেড়ে লও। লক্ষ লক্ষ মানুষ এখানে আপনার সাহায্যকারী হবে। সায়্যিদ সাহেব উত্তর দিলেন কারো দেশ কেড়ে নিয়ে আমার রাজত্ব করতে চাইনা। ইংরেজদেরও না, না শিখদের রাজ্য কেড়ে লওয়া আমাদের উদ্দেশ্য। ইংরেজ সরকার যদিও ইসলাম ধর্মের মুনকের হয়। কিন্তু মুসলমানদের উপর কোন প্রকার নির্যাতন ও অত্যাচার করছেনা এবং তাদের কোন ফরজ কাজও অবশ্যকরণীয় ইবাদতেও বাঁধা দিচ্ছেনা। (মওজে কাওছার পৃঃ নং- ২৫)
(ঘ)ওহাবী নজদীর একান্ত বিশ্বস্ত ইতিহাস লেখক- মির্জা হায়রত বলেন-
“কলকাতায় মাওলানা ইসমাইল সাহেব ওয়াজ করা আরম্ভ করেন এবং শিখদের নির্যাতন এর অবস্থা পেশ করেন, তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করে, আপনি ইংরেজদের বিরুদ্বে ফতোয়া কেন দেন না? তিনি উত্তর দেন তাদের বিরুদ্বে জিহাদ করা কোনভাবে ওয়াজিব নয়। প্রথমত, আমরা তাদের প্রজা। দ্বিতীয়ত, আমাদের আরকান(ফরজ কাজসমূহ) পালণে ওরা কোনরূপ হস্থক্ষেপ করেনা। তাদের রাজত্ব্যে আমরা সামগ্রিকভাবে স্বাধীন। বরং কেউ তাদের উপর আক্রমণ করলে মুসলমানদের উপর ফরজ হবে যে, তার সাথে যুদ্ব করা এবং স্বাধীন সরকারের উপর যাতে কোন দাগ না লাগে।” (হায়াতে তৈয়্যবা ২৯৬পৃ)
(ঙ) আল হায়াত বা’দাল মমাত গ্রন্থে আছে-
“তিনি (ইসমাইল দেহলভী) তার পীর সায়্যিদ আহমদকে ইমাম স্বীকার করে মুসলমানদের একটি দল নিয়ে যুদ্বের জন্য পাজ্ঞাব পৌঁছেন। ইংরেজ সরকার তাঁর এই বাসনায় কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা ও জঠিলতা সৃষ্টি করলেন না।” (আল হায়াত বা’দাল মমাত পৃঃ নং- ২০৩)
(চ)এশায়াতুস সুন্নাহ গ্রন্থে আছে-
“সায়্যিদ সাহেব, মৌলভী ইসমাইল সাহেব ইংরেজদের সাথে যুদ্ব করার কখনো ইচ্ছা করেননি। মৌলভী ইসমাঈল কলকাতায় তার এক ওয়াজ মাহফিলে প্রকাশ্যে বলেন যে, ইংরেজদের বিরুদ্বে যুদ্ব করা আমাদের জন্য জায়েজ নয়।
(এশায়াতুস সুন্নাহ ২য় খন্ড, জমীমা ৫,৬ পৃঃ)
(ছ) তাহরিক্বে জিহাদ কা সরমায়া গ্রন্থের ৪নং পৃষ্ঠায় আছে-
“হযরতের শাহাদাতের পর যে আবস্থা সৃষ্ঠি হয়, সে সময় যে কিতাবগুলি হযরত সায়্যিদ ও তাঁর উদ্দ্যেশ্যের উপর লিখা হয়, প্রত্যেকটিতে এই কথা বার বার প্রমাণ করা হয় যে, ইংরেজদের বিরূদ্বে হযরত সায়্যিদ আহমদ শহিদ কোন আন্দোলন করেন নি।
(জ) সায়্যিদ আহমদ খাঁ বলেন-
“তাঁরা নিজেদের ছেলে-মেয়েদের এবং আসবাবপত্র রক্ষনা-বেক্ষণের জন্যে ইংরেজ সরকারের হাতে রেখে যান এবং তাদের মযহাব মতে, ছেলে-মেয়েদের রক্ষকের বিরুদ্বে আক্রমণ করা কঠোরভাবে নিষেধ”।
(মক্বালাত-এ-স্যার সায়্যিদ ৯ম খঃ ১৪৮পৃঃ)
(ঞ) হিন্দুস্থান কি পহেলি ইসলামী তাহরিক ৫৪-৫৫ পৃষ্ঠায় রয়েছে-
“সে সময় কাশ্মীরের রাজা গুলাভ শিং ও মুজাহিদের মাঝে যুদ্ব চলছিল। রাজা হেরে যায় এবং সে ইংরেজদের ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণ করে। যা সে সময় পাঞ্জাব পর্যন্ত দখল করেছিল। ইংরেজ সরকার মাওলানা বেলায়ত আলীকে জানিয়ে দিলেন যে, এখন গুলাভ শিং এর উপর আক্রমণ করা স্বয়ং ইংরেজ সরকারের সাথে যুদ্ব ক্রয় করে নেওয়া হবে। ইংরেজ সরকারের কৌশল ছিল মুজাহিদদের মাধ্যমে শিখদের দূর্বল করা”।
(২) ইংরেজদের খাদ্য সরবরাহে সায়্যিদ আহমদ বেরেলভীঃ
সায়্যিদ আহমদ বেরেলভী সর্বপ্রথম জীবনী লেখক জনাব জাফর থানেশ্বরী বলেনঃ
“নানা প্রকার ভারে ভারে খাদ্যদ্রব্য নিয়ে একজন ঘোড়ায় চড়ে আসছে। নোকার নিকট এসে জিজ্ঞাসা করে যে, পাদ্রী সাহেব কই? সালাম ও কুশল বিনিময়ের পর নিবেদন করে যে, তিনদিন হতে এখানে হুজুরের আগমন বার্তার জন্য চাকর নিযুক্ত করা হয়েছিল। সে আজকে আমায় খবর দেয়। এই খাদ্য-দ্রব্য হুজুর ও সমস্ত বাহিনীর জন্য তৈয়ার করে নিয়ে আসছি। দয়া করে গ্রহণ করুন। হযরত স্বীয় বাহিনীকে হুকুম দেন যে, তাড়াতাড়ি খাদ্য নিজ নিজ বর্তনে নিয়ে বাহিনীর মধ্যে বন্টন করে দাও। সে ইংরেজ প্রায় দুই ঘণ্টা যাবত হুজুরের নিকট উপস্থিত থাকে।
(ছাওয়ানে আহমদী পৃঃ নং-৪৯)
(৩)ইংরেজদের নিমন্ত্রণ গ্রহণে সায়্যিদ আহমদ বেরেলভীঃ
আবুল হাছান আলী নদভী বলেন-
“আসরুলি নামক স্থানের ৪ মাইল পূর্বে হযরত এর কাছে একজন ইংরেজ হিন্দুস্থানী স্ত্রী এসে খাওয়ার দাওয়াত দিলে, তিনি (যেতে) অস্বীকার করেন। পরে ইংরেজ আসলে তিনি বলেন, আপনার দাওয়াত আমি কেন গ্রহণ করব না। তিনি উনার দাওয়াত গ্রহণ করেন। ঔ দিন তাঁর দাওয়াত খান”। (সিরাতে সায়্যিদ আহমদ শহিদ ১৪ পৃঃ ২০, ২১৯পৃ)
(৪) ইংরেজদের গোয়েন্দা হিসেবে সায়্যিদ আহমদ বেরেলভীঃ
হাসিয়া-এ-মক্বালাত-এ-স্যার সায়্যিদ ১৬তম খঃ২৫১পৃষ্ঠায় রয়েছে-
“হযরত শহিদ যুদ্ধ উদ্দেশ্যে সিব্দু ও সীমান্ত প্রদেশে প্রবেশ করেন। (যা ইংরেজদের দখলে ছিল না) তাদের সম্বন্ধে তখন সাধারণত এই স্নদেহ পোষণ করা হয়েছে যে, তাঁরা ইংরেজদের গুপ্তচর। এই ভাবে সন্দেহ করার কারণ হচ্ছে ইংরেজদের সাথে হযরত শহিদের গভীর ও মধুর সম্পর্ক ছিল”।
সায়্যিদ আহমদ সাহেবের অন্যতম ভক্ত জনাব গোলাম রাসুল মেহেরও একথা অকপটে স্বীকার
করেছেন যে,
সীমান্ত
প্রদেশের আলেমগণ সায়্যিদ আহমদ বেরেলভীকে ইংরেজ গোয়েন্দা ও গুপ্তচর চিহ্নিত করে
ফতোয়া প্রদান করেন।
সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দঃ আমি আপনাদের সমীপে যে সমস্ত কিতাবগুলোর দ্বারা এই যাবৎ উদ্বৃতি প্রদান করেছি, সবগুলো দেওবন্দী ও ওহাবীদের লিখা। তাই তাদের উক্তিগুলোর হুবহু অনুবাদ করতে গিয়ে ইসমাইল দেওবন্দী ও সায়্যিদ আহমদ বেরেলভী সাথে শহিদ সংযুক্ত করেছি। নতুবা শরিয়তের পরিভাষায় এরা কেউ শহিদ নয়।
(৫) মৌলভী শিরিবর আহমদ দেওবন্দী বলেন-
“মৌলভী আশরাফ আলী থানবী, মৌলভী রশিদ আহমদ গাঙ্গুলী, মৌলভী খলিল আহমদ আম্বটুবী, মৌলভী ইসমাইল ও মৌঃ ইলিয়াছ প্রমুখ দেওবন্দী মৌলভীদেরকে ব্রিটিশ গভর্ণরের পক্ষ থেকে নিয়মিত মাসিক ৬০০টাকা ভাতা হিসেবে দেওয়া হত”।(মাক্বালামাতুছ ছদরাইন)
(৬)স্যার সৈয়দ আহমদ ওহাবী সম্পর্কে বলেন-
“বিদ্রোহী (সিপাহী বিপ্লব) চলাকালীন সময়ে ওহাবীদের আনুগত্য ছিল দৃঢ় এবং তাঁরা বৃটিশ সরকারের প্রতি চির অনুগত ছিল”। (প্রাগুক্ত, পৃঃ নং-১৭৭)
তিনি অন্যত্র বলেন-
“বৃটিশ শাসনের অধীনে ওহাবীরা যে ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করে, তা আর কোথাও নেই। তাদের জন্য ভারত হলো দারুল আমান (শান্তির দেশ)”। (মাক্বালাত-আ-স্যার সৈয়দ আহমদ ৯ম খন্ড, মজলিসে তরক্কীয়ে আদব, লাহোর ১৯৬২ইং পৃঃ ন্ন-২১২)
সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দঃ আমি আপনাদের সমীপে যে সমস্ত কিতাবগুলোর দ্বারা এই যাবৎ উদ্বৃতি প্রদান করেছি, সবগুলো দেওবন্দী ও ওহাবীদের লিখা। তাই তাদের উক্তিগুলোর হুবহু অনুবাদ করতে গিয়ে ইসমাইল দেওবন্দী ও সায়্যিদ আহমদ বেরেলভী সাথে শহিদ সংযুক্ত করেছি। নতুবা শরিয়তের পরিভাষায় এরা কেউ শহিদ নয়।
(৫) মৌলভী শিরিবর আহমদ দেওবন্দী বলেন-
“মৌলভী আশরাফ আলী থানবী, মৌলভী রশিদ আহমদ গাঙ্গুলী, মৌলভী খলিল আহমদ আম্বটুবী, মৌলভী ইসমাইল ও মৌঃ ইলিয়াছ প্রমুখ দেওবন্দী মৌলভীদেরকে ব্রিটিশ গভর্ণরের পক্ষ থেকে নিয়মিত মাসিক ৬০০টাকা ভাতা হিসেবে দেওয়া হত”।(মাক্বালামাতুছ ছদরাইন)
(৬)স্যার সৈয়দ আহমদ ওহাবী সম্পর্কে বলেন-
“বিদ্রোহী (সিপাহী বিপ্লব) চলাকালীন সময়ে ওহাবীদের আনুগত্য ছিল দৃঢ় এবং তাঁরা বৃটিশ সরকারের প্রতি চির অনুগত ছিল”। (প্রাগুক্ত, পৃঃ নং-১৭৭)
তিনি অন্যত্র বলেন-
“বৃটিশ শাসনের অধীনে ওহাবীরা যে ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করে, তা আর কোথাও নেই। তাদের জন্য ভারত হলো দারুল আমান (শান্তির দেশ)”। (মাক্বালাত-আ-স্যার সৈয়দ আহমদ ৯ম খন্ড, মজলিসে তরক্কীয়ে আদব, লাহোর ১৯৬২ইং পৃঃ ন্ন-২১২)
তিনি অন্যত্র বলেন-
“বৃটিশের বিরুদ্বে বিদ্রোহ করা অপরাধ”। তিনি আরো বলেন-“আমি নিজেই ওহাবী। ওহাবী হওয়া কোন অপরাধ নয়। কিন্তু বৃটিশ সরকারের অবাধ্য হওয়া একটি আপরাধ”। (আলতাফ হোসাইন হালী রচিত হায়াতে জাওয়াইদ পঞ্চম অধ্যায়-লাহোর, ১৯৬৫ইং পৃঃ নং- ১৭৫)
(৭) দেওবন্দীদের অন্যতম মুরুব্বী মৌলভী রশিদ আহমদ গাঙ্গুলী বলেন-
“আমি বাস্তবিকই বৃটিশ সরকারের অনুগত থেকেছি। মিথ্যা অভিযোগ আমার কোন ক্ষতি করতে পারেব না। যদি আমি নিহত হই তবুও সরকারই (বৃটিশ) সর্বেসর্বা। তার যা ইচ্ছা করতে সে সক্ষম”।(আশেক আলী মীরাটী কৃত তাযকিয়াতুর রশিদ ১ম খন্ড মাহবুব প্রেস, দিল্লী, পৃঃ নং- ৮০)
(8) ওহাবী মৌলভী শিবলী নোমানী বলেন-
“বৃটিশ আনুগত্য করা মুসলমানদের জন্য ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বাধ্যতামূলক”। (মুহাম্মদ ইকরাম লিখিত শিবলী নামা পৃঃ নং- ২৪৫ এবং সুলায়মান নদভীর প্রণীত “হায়াতে শিবলী” আজম গড় ১৯৪৩ইং পৃঃ নং-৬৩৪)
(৯) ক্বারী মুহাম্মদ সোলায়মান মনসুর পুরী দেওবন্দী বলেন-
“আমি আশা করি যে, কোন মুসলমানই আল্লাহ তায়ালার হুকুমের আলোকে সরকার অবাধ্য কিংবা বিরুদ্বাচারণকারী হতে পারবেন না। কেননা তারা (বৃটিশরা) অপবিত্র কাজকর্ম, অনৈতিক ক্রিয়া ও বিদ্রোহ নিষেধ করেন। মুসলমানদের উচিত চিরদিন এই আদেশ স্মরণ রাখাল”। (তাঁর সভাপতির ভাষণ, নিখিল ভারত আহলে হাদিস কনফারেন্স, আগ্রা,৩০/০৩/১৯২৮ইং)
(১০) জনৈক সরকারী কর্মকর্তা মাদরাসা-এ- দেওবন্দে ভাষণে বলেন –
“এ মাদরাসা সরকারের বিরুদ্বে নয়। বরং সরকারের অনুগত ও সাহায্যকারী”।
(আখবারে আঞ্জুমান, পাঞ্জাব, লাহোর, তারিখ ১৯/০২/১৮৭৫ইং)
(১১) ভূপালের নবাব সিদ্দীক হাসান খান বলেন-
“আনি ৩০ বৎসর যাবৎ ভূপালের বাসিন্দা। বৃটিশ সরকার সার্বিকভাবে এ রাজ্যের এবং বিশেষ করে দীনহীন সিদ্দীক আলী খানের আনুগত্য ও শুভাকাংখা লক্ষ করেছেন। (তাঁর প্রণীত তরজুমানে ওহাবীয়া, লাহোর, ১৩১৩ হিজরি, পৃঃ নং- ৯ এবং ২৯)
তিনি অন্যত্র ১৮৫৭ সাকের স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কে বলেন-
“ভারত্র সংঘটিত এই বিদ্রোহকে জিহাদ হিদেবে বর্ণনা করাই হল তাদেরই কাজ, যারা ইসলামকে বুঝেনা এবং দেশে গণ্ডগোল, হট্টগোল বাধাতে চাই”।
(প্রাগুক্ত পৃঃ নং- ১০৬)
(১২) মাওলানা মুহাম্মদ আলী জাওহর নিজ পাপ স্বীকার কালে বলেন-
“আমরা ১৫০০শত কোটি রুগী যুদ্বের জন্য (তুর্কী মুসলমানদের বিরুদ্বে) দান করছি এবং লক্ষ লক্ষ সৈন্য যুদ্ব ক্ষেত্রে প্রেরণ করছি। আমরা আমাদের ঈমান বিক্রি করে দিয়েছি। মুসলমানগণ তাদের প্রাতৃগণকে হত্যা করেছেন। কিন্তু এ বিশাল কোরবানীর জন্য ক্ষতিপূরণ অত্যন্ত হতাশা ব্যঞ্জক”। (১৯১৯সালে অমৃতসারে নিখিল ভারত কংগ্রেজ সেশনে মুহাম্মদ আলী জওহ্রের ভাষণ, তথ্যসুত্রঃ রইস আহমদ জাফরের সংকলিত আওরাকে গুমগুশতা, লাহীর ১৯৭৮ ইং পৃঃ নং- ১২০)
(13) দেওবন্দীদের হাকিমুল উম্মত মোলভী আশরফ আলী থানবী প্রকাশ্যে বৃটিশের পক্ষে বলেন যে, “প্রাচিন কাল থেকে খ্রীষ্টান্দের আইন ও ধর্ম অন্য কোন ধর্মের বিরোধীতা করেনা অথবা সমাজে আমাদের সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেনা। তাই তাদের (বৃটিশদের) প্রজা হওয়া অনুমতি প্রাপ্ত”। (১০ই সফর ১৩৪৯হিজরী, ১৯৩১ইং তথ্যসুত্রঃ রইস আহমদ জাফরী কৃত আওরাকে গুম গুশতা, পৃঃ নং- ৩২৪)
(১৪) মাওলানা সাব্বির আহমদ দেওবন্দী ওহাবী মোলভী আশরফ আলী থানবী সম্পর্কে বলেন- “হযরত মাওলানা আশরফ আলী থানবী ছিলেন আমাদের পুণ্যবান আলেম ও বুজুর্গ। কিছু মানুষ এমনকি বলতেও শুনেছেন যে, তিনি সরকার (বৃটীশ) থেকে মাসিক ৬০০ রুপী গ্রহণ করেছেন। একই সময়ে তিনি এই কথাও বলেছেন যে, বৃটিশ সরকার তাকে কত টাকা বাতা দিতেন। তা তিনি জানতেন না। ( মুহাম্মদ জাকী দেওবন্দী কৃত মাক্বালাতুস ছদরাইন, ২৭শে জিলহজ্ব ১৩৬৪ হিঃ দারুল ইশাআত দেইবন্দ)
(১৫) মাওলানা হাফিজুর রহমান সিওহারভী ওহাবী তবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলীয়াছ মেওয়াটী সম্পর্কে বলেন- “ মাওলানা ইলিয়াছের তবলীগী আন্দোলন হাজী রশিদ আহমদের মাধ্যমে বৃটিশ সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য পেতো। পরবর্তীকালে এটা বন্ধ হয়ে যায়”। (প্রাগুক্ত পৃঃ নং- 8)
প্রিয় পাঠকবৃন্দ! আমি পূর্বেই বলেছি যে, আ’লা হযরত আজিমুল বরকত চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ ইমাম আহমদ রেজা খাঁ ফাজেলে বেরেলভী (রহঃ) কখনোই বৃটিশের দালাল ও পেট পূজারী ছিলেন না । এ ব্যাপারে ইতিহাসে যথেষ্ট প্রমাণাদি বিদ্যামান। ইতিহাসের পাতা থেকে আপনাদের সমীপে প্রমাণ্য দলীল পেশ করছি।
(১) মুহাম্মদ আলী বলেন-
“ বৃটিশরা কখনোই ইমাম আহমদ রেযা খাঁনকে দাওয়াত করেননি। যেমনিভাবে তারা দাওয়াত করেছিলেন মোলভী সৈয়দ আহমদ বেরেলভীকে”।
(মখযানে আহমদী, মুফীদেআম, আগ্রা কর্তৃক প্রকাশিত, পৃঃ নং- ৬৭)
(২) হোসাইন আহমদ মাদানী বলেন-
“বৃটিশরা কখনোই ইমাম আহমদ রেযা খাঁনকে সাহায্য করেননি। যেমনিভাবে তারা সাহায্য করেছিলেন মোলভী সৈয়দ আহমদ বেরেলভীকে”। ( নখশে হায়াত, দিল্লী ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত পৃঃ নং- ১২ বা ১৩)
(৩) বৃটিশরা হেজাযের রাজা আব্দুল আজীজ ইবনে সউদকে যেভাবে “সিতারায়ে হিন্দ” উপাধী দান করেছিলেন, সেভাবে তারা কখনোও ইমাম আহমদ রেজা খানকে কোন পদক বা উপাধি দান করেননি। (১৯১৬ইং সালে বৃটিশ সরকার “সিতারায়ে হিন্দ” উপাধিটি রাজা ইবনে সউদকে দান করেন। বৃটিশ সরকার উপসাগরীয় প্রতিনিধি স্যার পারসি কক্স তাকে (সউদ) কুয়েতে এ পদকটি পরিয়ে দেন। “সারগুযাশত-এ-হেজায” গ্রন্তের মধ্যে এর ছবি ছাপানো হয়েছে। ১৮ পৃষ্ঠার উল্টো পৃষ্ঠায় দেখুন।
(৪) মওলভী নাযির হোসাইনের মতো ইমাম আহমদ রেযাখানকে বৃটিশ কমিশনার কোন সনদ দেননি। এই মর্মে- “মওলভী নাযির হুসাইন দিল্লীর একজন প্রখ্যাত আলেন যিনি সংক্টময় মুহুর্তগুলোতে বৃটিশের প্রতি অনুগত ছিলেন”। (দিল্লীর কমিশনারের চিঠি, তাঃ-১০/০৮/১৮৮৩ইং, তথ্যসুত্রঃ ফযল হুসেইন-বিহারীকৃত আল হায়াত বা’দাল মামাত করাচী ১৯৫৯ইং পৃঃ-১৪০)
(৫) মুহাম্মদ ইকরাম ও সোলায়মান নদভী বলেন-
“নদওয়াতুল ওলামার মতো ইমাম আহমদ রেযা খান কোন বৃটিশ কর্তা ব্যক্তি দ্বারা তাঁর মাদরাসা দারুল উলুম মানযারে ইসলামের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করান নি”। (শিবলী নামা, পৃঃ নং- ২৪৫, হায়াতে শিবলী পৃঃ নং- ৪৮২)
তারা উভয়ে বলেন-
“নদওয়াতুল ওলামার মতো মানযারে ইসলাম মাদরাসার জন্যে কোন দানও মঞ্জুর করা হয়নি”। (শিবলী নামা, পৃঃ নং- ১৭৮, হায়াতে শিবলী পৃঃ নং- ৬৩১-৬৩২)
(৬) দারুল দেওবন্দের মতো ইমাম আহমদ রেযা খান (রহঃ) কখনোই কোন অমুসলিম নেতাকে তাঁর মাদরাসার একাডেমীক কিংবা ধর্মীয় সভায় সভাপতিত্ব করার জন্যে দাওয়াত করেন নি। তিনি মজলিসে ওলামাকে হেয় প্রতিপন্ন করেন নি, কোন অমুসলিমকে সভাপতি বানিয়ে। (দৈনিক জংগ, ১৬/০৩/১৯৮০ইং পৃঃ নং ১২ কলাম নং-৮। প্রাগুক্ত,২১/০৩/১৯৮০ইং পৃঃ নং ১২, কলাম নং-৮। প্রাগুক্ত,২৩/০৩/১৯৮০ইং পৃঃ নং ২, কলাম নং-৬। প্রাগুক্ত,২০/০৩/১৯৮০ইং পৃঃ নং ১, কলাম নং-৩। প্রাগুক্ত,২২/০৩/১৯৮০ইং পৃঃ নং ১, কলাম নং-৫ এবং ৬। প্রাগুক্ত,৩/০৩/১৯৮০ইং পৃঃ নং ৪, কলাম নং-৭ও৮।)
(৭) ইমাম আহমদ রেযা খানের জনৈক সমসামিয়ক ব্যক্তিত্ব এবং ঘটনা প্রবাহের একজন প্রত্যক্ষ দর্শী সৈয়দ আলতাফ আলী বেরেলভী, যিনি পাকিস্তান এভুকশনাল কনফারেন্স করাচী এর সেক্রেটারী জেনারেল ছিলেন; তিনি বলেন- “রাজনৈতিকভাবে বলতে গেলে হযরত মাওলানা আহমদ রেযা খান বাস্তবিকই একজন স্বাধীনতা প্রেমিক ছিলেন। তাঁর হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে তিনি বৃটিশ ও তাদের শাসনকে ঘৃণা করতেন। তিনি কিংবা তাঁর দুই পুত্র মাওলানা হামদ রেযা খাঁন ও মোস্তফা রেযা খাঁন কখনোই শামসুল উলামা (উলামাদের সুর্য) জাতীয় খেতাব অর্জনের চিন্তাও করেননি। ভারতের শাসকবর্গ, সরকারী কর্মকর্তা কিংবা প্রাদেশিক অমাত্যবর্গের সাথেও তাদের কোন সম্পর্ক ছিলনা”। (প্রাগুক্ত দৈনিক করাচী ২৫শে জানুয়ারী ১৯৭৯,পৃষ্ঠা-৬, কলাম ৪ এবং ৫)
(৮) বৃটিশ সরকার ছাড়াও ইমাম আহমদ রেযা খান বৃটিশ রাজা বাদশাহদের চাছন্দ করলেন না। সৈয়দ আলতাফ আলী বেরেলভী এ সম্পর্কে লিখেন-“সৈয়দ আলহাজ্ব আইয়ুব আলী রেযভীর ভাষ্যানুযায়ী ইমাম আহমদ রেযা খাঁ এমনভাবে চিঠির শামে ডাক টিকেট সংযুক্ত করতেন যার দরুণ রাণী ভিক্টোরিয়া, এডওয়ার্ড-৮ এবং জর্জ-৫ এর মাথা নিচের দিকে থাকতো”। (দৈনিক জং, করাচী, তাং ২৫/১/১৯৭৯ইং, পৃষ্ঠা-৬,কলম-৫)
গুরুত্বপুর্ণ তথ্যবলীর প্রেক্ষিতে প্রমাণিত হয় যে, আলা হযরত (রহঃ) ছিলেন
ইসলামী জগতের একজন জ্ঞানী গুণী ব্যাক্তিত্ব ও প্রতিভাধর আলেম। ইতিহাস স্বাক্ষী রয়েছে যে, তিনি কখনো বৃটিশ বা ইংরেজ
বেনীয়াদের পক্ষে ছিলেন না। বরং তিনি মনে-প্রাণে তাদের ঘৃণা করতেন। আমি পূর্বেই বিভিন্ন
বরণ্য দলীল দ্বারা তা প্রমাণ করেছি এবার বৃটিশ বা ইংরেজ বেনীয়াদের সম্পর্কে আলা
হযরত ইমাম আহমদ রেযা খাঁ (রহঃ) এর দ্ব্যর্থহীন মন্তব্য শুনুন-
(৯) “ইংরেজ রীতি ও ফ্যাশন থেকে এবং নাস্তিক ও মুক্ত চিন্তা থেকে মুক্তি প্রাপ্তি আত্নিক প্রশান্তির কারণ। আল্লাহ আমাদের হেদায়ত দিন। কিন্তু এগুলো অর্জনের জন্য শুধু মাত্র সাহায্য প্রত্যাখান কিংবা সংশ্লিষ্ঠতা নাচক করলেই চলবেনা, বরং সৈয়দ আহমদ খাঁ যে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন তাকে নির্বাপন করতে হবে। এখানে বহুলোক এর দ্বারা অক্রান্ত দেখা যাছে”। (ইমাম আহমদ রেযাখান (রহঃ) কৃত আল মোহাজ্জাত আল মোতামিনা ফি আয়াত আল মোমতাহিনা, লাহোর- এ- প্রকাশিত, পৃঃ নং- ৯৩)
(11) ইউরোপীয় পোষাক পরিচ্ছেদ পরিধান করা কঠোরভাবে নিষিদ্ব। এ সকল লেবাছে নামাজ আদায় করা মাকরুহে তাহরীমি যা প্রায় হারাম। যদি কেউ ইসলামী পোষাক নামায না পড়ে, তবে সে পাপী হবে এবং সে খোদা তায়ালার শাস্তিযোগ্যও হবে। আল্লাহ মাফকরুন, যিনি সর্বশক্তিমান ও আত্যন্ত ক্ষমাশীল”। (ইমাম আহমদ রেযা খাঁন লিখিত আল আতায়া আল নব্বীয়া ফিল ফাতাওয়া আল রাযাভীয়া, তয় খন্ড, পৃঃ নং- ৪৪২, লাইলপুরে প্রকাশিত।)
(১২) ওয়াল্লাহ! এই জাতি (বৃটিশ) কৃত অযৌক্তিক ও আবেগ প্রাণ! এটা সত্যি দুঃখজনক যে, এই জাতি খোদাদ্রোহী হওয়ার মত ঔদ্বত্যভাব পোষণ করছে। আর মসলমানগণ ও তাদের আবর্জনাময় মতবাদ গ্রহণ করছেন এই বলে যে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর কাছ হতে এবং নিশ্চয় তাঁর কাছে আমরা প্রত্যাবর্তন করবো”। (ইমাম আহমদ রেযা খান প্রণীত আল সামসাম আলা মোশাককাক ফি আয়াতে উলুম আল আরহাম, ১৩১৫ হিজরি- ১৮৯৭ইং সালে লিখিত এবং লাহোরে প্রকাশিত; পৃঃ নং- ১৯/২০ দ্র:)
“এছলাহুল মুছলেমীন” পুস্তিকার ইলমহীন লেখক আহমদগণি গদ্দালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়েছেন। তাই হিতাহিত জ্ঞান শূণ্য হয়ে পড়েছেন। ভূরি ভূরি প্রমাণাদি অবলোকন করে এখন নিশ্চয় কিংকর্তব্য বিমূঢ় হয়ে যাবেন। ইতিহাস নীরব স্বাক্ষী। বিজ্ঞজনেরা তা সহজেই বুঝতে পারবেন যে, ইতিহাস রদবদল করলে তা অবশ্যই ধরা পড়বে। আহমদ গণি ইতিহাস বিকৃত করেছেন। ইমাম আহমদ রেযা খান (রহঃ) এসব মিথ্যা অপবাদ থেকে পূত-পবিত্র। আসলে বৃটিশের দালাল ও পেটপুজারী আলেম ছিলেন দেওবন্দী ওহাবীরা। আমি এ ব্যাপারে গাদা গাদা ঐতিহাসিক প্রমাণাদি পেশ করেছি। বিজ্ঞ পাঠক মহলের কাছে আর সন্দেহের অবকাশ থাকেনা যে, সত্যকে ধামাচাপা দেয়ার জন্যে আহমদ গণির এটা কোন নতুন কৌশল। “এছলাহুল মুছলেমীন” পুস্তিকার “১৩২” পৃষ্ঠায় তিনি যে বিবরণ দিয়েছেন তাতে কোন ঐতিহাসিক গ্রন্থের উদ্বৃতি নেই। তাই তার কথাগুলো ডাহা মিথ্যা। অধিকন্তু আমি ওহাবী দেওবন্দীদেরকে বৃটিশের দালাল হিসেবে প্রমাণ করার জন্যে তাদের নিজেদের লিখিত অধিকাংশে গ্রন্থাবলী থেকে তথ্য দিয়েছি।
বাতিল ফেরকার মুরুব্বীগণ আ’লা হযরত (রহঃ) সম্পর্কে যা বলেন-
ইয়াছিন আখতার মিছবাহী কৃত ‘দেবুস্থানে রেযা’ গ্রন্থে যে সকল মনীষী আ’লা হযরতের জ্ঞান-গরিমা ও শ্রেষ্ঠত্ব সম্
(৯) “ইংরেজ রীতি ও ফ্যাশন থেকে এবং নাস্তিক ও মুক্ত চিন্তা থেকে মুক্তি প্রাপ্তি আত্নিক প্রশান্তির কারণ। আল্লাহ আমাদের হেদায়ত দিন। কিন্তু এগুলো অর্জনের জন্য শুধু মাত্র সাহায্য প্রত্যাখান কিংবা সংশ্লিষ্ঠতা নাচক করলেই চলবেনা, বরং সৈয়দ আহমদ খাঁ যে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন তাকে নির্বাপন করতে হবে। এখানে বহুলোক এর দ্বারা অক্রান্ত দেখা যাছে”। (ইমাম আহমদ রেযাখান (রহঃ) কৃত আল মোহাজ্জাত আল মোতামিনা ফি আয়াত আল মোমতাহিনা, লাহোর- এ- প্রকাশিত, পৃঃ নং- ৯৩)
(11) ইউরোপীয় পোষাক পরিচ্ছেদ পরিধান করা কঠোরভাবে নিষিদ্ব। এ সকল লেবাছে নামাজ আদায় করা মাকরুহে তাহরীমি যা প্রায় হারাম। যদি কেউ ইসলামী পোষাক নামায না পড়ে, তবে সে পাপী হবে এবং সে খোদা তায়ালার শাস্তিযোগ্যও হবে। আল্লাহ মাফকরুন, যিনি সর্বশক্তিমান ও আত্যন্ত ক্ষমাশীল”। (ইমাম আহমদ রেযা খাঁন লিখিত আল আতায়া আল নব্বীয়া ফিল ফাতাওয়া আল রাযাভীয়া, তয় খন্ড, পৃঃ নং- ৪৪২, লাইলপুরে প্রকাশিত।)
(১২) ওয়াল্লাহ! এই জাতি (বৃটিশ) কৃত অযৌক্তিক ও আবেগ প্রাণ! এটা সত্যি দুঃখজনক যে, এই জাতি খোদাদ্রোহী হওয়ার মত ঔদ্বত্যভাব পোষণ করছে। আর মসলমানগণ ও তাদের আবর্জনাময় মতবাদ গ্রহণ করছেন এই বলে যে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর কাছ হতে এবং নিশ্চয় তাঁর কাছে আমরা প্রত্যাবর্তন করবো”। (ইমাম আহমদ রেযা খান প্রণীত আল সামসাম আলা মোশাককাক ফি আয়াতে উলুম আল আরহাম, ১৩১৫ হিজরি- ১৮৯৭ইং সালে লিখিত এবং লাহোরে প্রকাশিত; পৃঃ নং- ১৯/২০ দ্র:)
“এছলাহুল মুছলেমীন” পুস্তিকার ইলমহীন লেখক আহমদগণি গদ্দালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়েছেন। তাই হিতাহিত জ্ঞান শূণ্য হয়ে পড়েছেন। ভূরি ভূরি প্রমাণাদি অবলোকন করে এখন নিশ্চয় কিংকর্তব্য বিমূঢ় হয়ে যাবেন। ইতিহাস নীরব স্বাক্ষী। বিজ্ঞজনেরা তা সহজেই বুঝতে পারবেন যে, ইতিহাস রদবদল করলে তা অবশ্যই ধরা পড়বে। আহমদ গণি ইতিহাস বিকৃত করেছেন। ইমাম আহমদ রেযা খান (রহঃ) এসব মিথ্যা অপবাদ থেকে পূত-পবিত্র। আসলে বৃটিশের দালাল ও পেটপুজারী আলেম ছিলেন দেওবন্দী ওহাবীরা। আমি এ ব্যাপারে গাদা গাদা ঐতিহাসিক প্রমাণাদি পেশ করেছি। বিজ্ঞ পাঠক মহলের কাছে আর সন্দেহের অবকাশ থাকেনা যে, সত্যকে ধামাচাপা দেয়ার জন্যে আহমদ গণির এটা কোন নতুন কৌশল। “এছলাহুল মুছলেমীন” পুস্তিকার “১৩২” পৃষ্ঠায় তিনি যে বিবরণ দিয়েছেন তাতে কোন ঐতিহাসিক গ্রন্থের উদ্বৃতি নেই। তাই তার কথাগুলো ডাহা মিথ্যা। অধিকন্তু আমি ওহাবী দেওবন্দীদেরকে বৃটিশের দালাল হিসেবে প্রমাণ করার জন্যে তাদের নিজেদের লিখিত অধিকাংশে গ্রন্থাবলী থেকে তথ্য দিয়েছি।
বাতিল ফেরকার মুরুব্বীগণ আ’লা হযরত (রহঃ) সম্পর্কে যা বলেন-
ইয়াছিন আখতার মিছবাহী কৃত ‘দেবুস্থানে রেযা’ গ্রন্থে যে সকল মনীষী আ’লা হযরতের জ্ঞান-গরিমা ও শ্রেষ্ঠত্ব সম্
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thaks for watching www.sunnihaque.blogspot.com